বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global warming) কারণ ও প্রভাব আলোচনা করো।
বন্ধুরা আজকে আমি নিয়ে এসেছি বিজ্ঞান এর একটি গুরুত্বপূর্ণ topic নিয়ে। এই topic টি তোমরা ভূগোলে ও দেখতে পাবে। এটি খুবই একটি মজাদার topic। আজকে আমরা আলোচনা করবো বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global warming) সম্পর্কে। আজকে আমরা বিশ্ব উষ্ণায়ন কী (What is Global Warming) এবং বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ ও প্রভাব (Causes and Effects of Global Warming) সবকিছু নিয়ে আলোচনা করেছি নিচে।এটি মাধ্যমিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তরটি আমার খুবই উপকার করেছে। তো বন্ধুরা তাই বলছি আপনারাও এই প্রশ্নের উত্তরটি অনুসরণ করুন অবশ্যই। যদি আপনার উত্তরটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি সেভ করে রাখতে পারেন এবং বাকি বন্ধুদের share ও করতে পারেন।
বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global
warming)
সাধারণত বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂), মিথেন (CH4), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O), ক্লোরোেফ্লুরো কার্বন (CFCs) প্রভৃতি গ্রিন হাউস গ্যাসগুলির অতিরিক্ত ঘনত্ব বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর চারিদিকে একটি আবরণের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সৌর বিকিরণ ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে পৃথিবীতে অবাধে পৌঁছাতে পারলেও পৃথিবী কর্তৃক বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গের সৌর বিকিরণ মহাশূন্যে ফিরে যেতে পারে না। পৃথিবীতে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে। এর ফলে পৃথিবীর
গড়
উষ্ণতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর গড় উষ্ণতার ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধিকে বিশ্ব
উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং (Global warming) বলা হয়।
বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ (Causes of
Global Warming)
[1] যানবাহন ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে জীবাশ্ম জ্বালানির অবাধ দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের (CO₂) পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে।
[2] জ্বালানি কাঠের অতিরিক্ত দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে CO₂-এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া কৃষিজমি, শিল্প কারখানার প্রসার, পরিবহণ ব্যবস্থা, জনবসতির বিস্তার প্রভৃতি কারণে অত্যাধিক হারে অরণ্য ধ্বংস করা হচ্ছে। যার পরিণতিতে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে।
[3] পচনশীল আবর্জনা, গবাদি পশুর গোবর, জলাভূমি, ধানখেত ইত্যাদি থেকে নির্গত মিথেন (CH4) গ্যাস বিশ্ব উষ্ণায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করছে।
[4] অত্যধিক হারে নাইট্রোজেন সার কৃষিজমিতে ব্যবহারের ফলে বায়ুমণ্ডলে নাইট্রাস অক্সাইডের (N₂O) পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া বনভূমিতে আগুন লেগে দাবানল সৃষ্টি হলে বাতাসে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) নির্গত হয়, যা বিশ্ব উষ্ণায়নে সাহায্য করে।
![]() |
বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ (Causes of Global Warming) |
[5] হিমায়িতকরণ বা রেফ্রিজারেশন, হিমঘর, রং শিল্প, ইলেকট্রনিক শিল্প প্রভৃতি থেকে বায়ুমণ্ডলে ক্লোরোফুরো কার্বনের (CFCs) পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা বিশ্ব উষ্ণায়নে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব (Effects
of Global Warming)
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এগুলি হল-
[1] জলবায়ুর পরিবর্তন: বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেলে বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর ওপর তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। যেমন, অতি বৃষ্টিপাতজনিত বন্যা, অনাবৃষ্টিজনিত খরা, দীর্ঘায়িত গ্রীষ্মকাল, বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়, ঘূর্ণবাতজনিত ঝড়-বৃষ্টি প্রভৃতির ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে।
[2] হিমবাহের গলন: পৃথিবীতে গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে কুমেরু অঞ্চলের পুরু বরফের স্তর ও অন্যান্য মহাদেশীয় হিমবাহ গলতে থাকবে। ফলে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি ঘটবে।
[3] মরুকরণ: পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে মরু অঞ্চলের সম্প্রসারণ ঘটবে। বিশেষ করে মরুভূমির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি মরুকরণের মাধ্যমে সম্প্রসারিত হবে।
[4] ভৌমজলের অভাব: পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিজনিত কারণে বৃষ্টিপাত ও মৃত্তিকা জলের পরিমাণ কমে গেলে ভৌমজলের ভাণ্ডারে অভাব দেখা দেবে।
[5] উদ্ভিদের বিনাশ: বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য সরলবর্গীয় ও ম্যানগ্রোভ অরণ্য চিরতরে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হবে।
[6] খাদ্যসংকট: বিশ্ব উষ্ণায়ন-এর ফলে ধান, গম, ওট, সয়াবিন প্রভৃতি ফসল উৎপাদন কমবে। ফলে পৃথিবীতে খাদ্যসংকট দেখা দেবে।
[7] রোগের প্রাদুর্ভাব: পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধিজনিত কারণে বিভিন্ন প্রকার রোগের (যেমন-ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, পীতজ্বর, স্টোক, হাঁপানি, ত্বকের ক্যানসার প্রভৃতি) প্রকোপ ও তীব্রতা বাড়বে।
আরও জানুন:
1. জীব বৈচিত্র্যের অবলুপ্তির কারণগুলি লেখ? (What are the causes of Biodiversity loss)|
3. জীববৈচিত্র্য বিনাশের কারণ ও প্রভাব আলোচনা করো (Causes and Effect of Loss of Biodiversity)।
4. গ্রিন হাউস গ্যাস- গ্যাসগুলির উৎস, প্রভাব ও ফলাফল, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবস্থাসমূহ আলোচনা করো।