আধুনিক বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে জগদীশচন্দ্র বসুর বসু বিজ্ঞান মন্দির এর অবদান লেখ।
ভূমিকা:-
ঔপনিবেশিক ভারতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণা ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের লক্ষ্যে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে তার মধ্যে অন্যতম হল- “বসু বিজ্ঞান মন্দির বা বোস ইনস্টিটিউট”। ভারতের আধুনিক বিজ্ঞান চর্চার উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে এর অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিষ্ঠা:-
১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্র বসু প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক এর পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার পূর্ব আশানুযায়ী তিনি বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণার উদ্দেশ্যে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ৩০ শে নভেম্বর কলকাতায় “বসু বিজ্ঞান মন্দির বা বোস ইনস্টিটিউট” প্রতিষ্ঠা করেন। এই কাজে তাকে সাহায্য করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
উদ্দেশ্য:-
- বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও জ্ঞানের প্রসার।
- বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সুফল দেশবাসীর মধ্যে উৎসর্গ করে দেওয়া।
- বিজ্ঞানের প্রগতি আরো বৃদ্ধি করা।
গবেষণালব্ধ বিষয়:-
তিনি তার বসু বিজ্ঞান মন্দিরে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়ো কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স ও পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণার ব্যবস্থা করেন।
কৃতিত্ব/অবদান/বসু বিজ্ঞান মন্দিরের গুরুত্ব:-
1. বিভিন্ন শাখা বৃদ্ধি:- এই প্রতিষ্ঠানে একাধিক বিষয় যেমন- পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে গবেষণা ব্যবস্থা করা হলে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।
2. উন্নত গবেষণা:- ইংল্যান্ডের “Royal Society”এর অনুকরণে ভারতে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে এখানে উন্নত গবেষণা বিজ্ঞান জগত ও আবিষ্কার কে আরো সহজ তর করেছিল।
3. ক্রেসকোগ্রাফ আবিষ্কার:- তার প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এই যন্ত্রের সাহায্যে তিনিই প্রথম প্রমাণ করেন- প্রাণীদের মত উদ্ভিদেরও প্রাণ ও অনুভূতি শক্তি আছে।
4. রেডিওর তরঙ্গ আবিষ্কার:- তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি রেডিওর তরঙ্গ আবিষ্কার করেন, যা বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে।
5. অন্যান্য আবিষ্কার:- এখানে গবেষণা করে অন্যান্য গবেষকরা তৈরি করেন ভারতের প্রথম উইলসন চেম্বার, ব্লাকফট-ওয়ালটন যন্ত্র প্রভৃতি।
6. আন্তর্জাতিক খ্যাতি:- বিজ্ঞানচর্চায় তার অবদান আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছে। এখানকার গবেষকরা বিভিন্ন বিশ্বের নানা প্রান্তে বিজ্ঞান চর্চায় খ্যাতি অর্জন করেন। তার গবেষণালব্ধ আবিস্কারের জন্য তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাকে “নাইট বা স্যার” উপাধি প্রদান করেন।
মন্তব্য:-