পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা লেখ।

Arpan

পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা লেখ

পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা
পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা

ভূমিকা:-
ডেভিড হেয়ার ছিলেন 19th শতকের একজন ভারত প্রেমিক মানবতাবাদী। 1775 খ্রিস্টাব্দে তিনি স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। 1800 খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় এসে ঘড়ির ব্যবসা শুরু করেন এবং প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন। উপনিবেশিক শাসনে দেশের মানুষের দুর্দশা দেখে তিনি ব্যথিত হন। বাংলার এই দুর্দশাগ্রস্থ মানুষদের আধুনিক মনষ্ক করে তোলার জন্য তিনি তাদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছিলেন।

তিনি বিভিন্ন সংস্কারক মূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন তা হল-

1. শোষণের বিরোধিতা:- তিনি দরিদ্র ভারতীয়দের উপর ঔপনিবেশিক শোষণের বিরোধিতা করেন। নিষ্ঠুর শ্রম আইন দ্বারা দরিদ্র শ্রমিকদের দাস হিসেবে ইউরোপে রপ্তানি, সংবাদপত্রের উপর সরকারি বিধিনিষেধ প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি প্রচার চালান।

2. হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা:- তিনি মনে করেন কলকাতায় একটি আধুনিক ইংরেজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাইড ইস্ট এর সমর্থনে 1817 খ্রিস্টাব্দের 23th জানুয়ারি কলকাতা হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কলেজ প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় ডেভিড হেয়ার।

3. স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা:-  দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি বাংলা ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনার উদ্দেশ্যে 1817 খ্রিস্টাব্দে স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

4. স্কুল প্রতিষ্ঠা:- তিনি 1818 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় একটি ইংরেজি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন। এটি প্রথমে আরপুলি পাঠশালা এবং পরে কলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুল নামে পরিচিত ছিল। 1856 খ্রিস্টাব্দে সরকার স্কুলটির অনুমোদনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং 1862-1863 খ্রিস্টাব্দে এর নামকরণ হয় হেয়ার স্কুল

5. মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে উৎসাহদান:- সামাজিক ধর্মীয় কারণে 19th শতকের প্রথম ভাগে স্থানীয় হিন্দু ছাত্ররা কলকাতায় মেডিকেলে ভর্তি হতে চাইতো না। তিনি অবিরাম প্রচার চালিয়ে এবং মানুষের মধ্যে কুসংস্কার দূর করে ছাত্রদের এই কলেজে ভর্তি হতে উৎসাহ দেন।

6. নারী শিক্ষার অগ্রগতি:- তিনি বাংলার নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে আন্তরিকতা দেখান। এই উদ্দেশ্যে মেয়েদের জন্য বেশ কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে নারী শিক্ষার পক্ষে জনমত গড়ে তোলে তোলেন।

7. দেশাত্মবোধ:- তিনি ঐকান্তিক আন্তরিকতার সহিত বাংলাকে ভালোবেসে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার চিন্তা ত্যাগ করেন। তিনি বাংলা ভাষায় কথা বলতেন, দেশীয় খাবার খেতেন, দেশীয় পোশাক পরতেন এবং স্থানীয় সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন।

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।