বিজ্ঞান চর্চায় কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের ভূমিকা আলোচনা কর।
![]() |
বিজ্ঞান চর্চায় কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের ভূমিকা |
ভূমিকা:-
ঔপনিবেশিক ভারতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণা ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের লক্ষ্যে যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হল কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ।
প্রতিষ্ঠা:-
বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়ে বাংলার বিভিন্ন মনীষী স্বদেশী বিজ্ঞান চর্চা ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের উদ্যোগ নেন। সমকালীন বিশিষ্ট আইনজীবী ও শিক্ষাদরদী স্যার তারকনাথ পালিত এবং স্যার রাসবিহারী ঘোষ বিজ্ঞান চর্চার জন্য ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে “কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ বা University College of Science
and Technology” প্রতিষ্ঠা করেন।
পঠন-পাঠন:-
স্যার আশুতোষ মুখার্জি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করেন। এখানে স্নাতকোত্তর বিজ্ঞান বিভাগ, ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিভাগে পঠন-পাঠন শুরু হয়।
কৃতিত্ব/অবদান/ভূমিকা:-
1. মৌলিক গবেষণা:- এই প্রতিষ্ঠানে গবেষকরা সক্রিয় সহযোগিতার জন্য বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণার সুযোগ পান। ফলে বিজ্ঞান চর্চার যথেষ্ট উন্নয়ন ঘটে।
2. খ্যাতনামা শিক্ষক:- আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন, শিশির কুমার মিত্র প্রমূখ শিক্ষক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। ফলে বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
3. শিক্ষকের উদ্যোগ:- এই কলেজের বিভিন্ন শিক্ষক দেশ ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যেমন- বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত “বেঙ্গল কেমিক্যাল” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের যুবসমাজকে সরকারি চাকরির মুখাপেক্ষী না থেকে স্বনির্ভর হতে উৎসাহিত করেন। এছাড়া বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু ও মেঘনাথ সাহা স্বাধীন ভারতে জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনে যুক্ত থেকে দেশ গঠনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
4. খ্যাতনামা শিক্ষার্থী:- এই বিজ্ঞান কলেজে বিজ্ঞান সাধনা করে বহু শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন সত্যেন্দ্রনাথ বোস, মেঘনাথ সাহা, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ, জ্ঞানেন্দ্র মুখার্জি প্রমুখ।