আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যার প্রসারে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা লেখ।

আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যার প্রসারে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা লেখ।


ভূমিকা:

 সুপ্রাচীন কাল থেকে ভারতে ভেষজ বিদ্যা, অপ রসায়নবিদ্যা ও ডাকোনি বিদ্যার সাহায্যে রোগ নির্ণয় ও নিরাময় করা হতো। কিন্তু এই পদ্ধতি উপযুক্ত ও যথার্থ ছিল না। আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যা প্রবর্তন ও প্রসারে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা নজিরবিহীন।

কমিটি গঠন: 
বড়লাট উইলিয়াম বেন্টিং বাংলা প্রদেশ আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যা গঠনের জন্য ডক্টর জন গ্ল্যান্ডের সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়(১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে)।

মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা: 
এই কমিটির সুপারিশ ভিত্তিতে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক কলিকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন (১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে)।

উদ্দেশ্য:

 কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি ভাষায় ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে শিক্ষাদান ও রোগ নিরাময় করা।

অর্থ দান: 
সরকার এদেশীয় চিকিৎসা শিক্ষাদানে অর্থব্যয়ের পরিবর্তে প্রাশ্চাত্যের আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যার জন্য অর্থ ব্যয় মঞ্জুর করে।

চিকিৎসা শাস্ত্রে শিক্ষাদান: 
এই কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ডক্টর জোসেফ ব্রামোলি ৪৩ জন ছাত্র নিয়ে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের শিক্ষাদান শুরু করেন। এই কলেজের সম্পাদক এদেশীয় 4 জন ছাত্রকে প্রথম বিলেতি চিকিৎসা বিদ্যা শিক্ষার উদ্দেশ্যে পাঠানের সুব্যবস্থা করেন (১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে)।

প্রথম ব্যাচ: 
কলিকাতার মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচে ডাক্তারি পাশ করেন উমাচরণ সেট, দারোকা নাথ গুহ, বিজয় কৃষ্ণ দে প্রমুখ। ডাক্তারি হিসাবে এরা নিযুক্ত হন ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, পাটনা, চট্টগ্রাম প্রভৃতি স্থানে। প্রথম মুসলিম ছাত্র রহিম খান এই কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন।

মহিলা চিকিৎসক: 
বাঙালি মেয়েরাও চিকিৎসা ক্ষেত্রে শিক্ষার জন্য এগিয়ে আসেন কাদম্বিনী গাঙ্গুলী, বিধুমুখী বসু, ভার্জিনিয়া মেরি মিত্র প্রমুখ।

  কলিকাতা মেডিকেল কলেজের বাঙালি ছাত্র মধুসূদন গুপ্ত সবাব্বছেদ করে চিকিৎসাবিদ্যায় এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটান।

চিকিৎসায় নবযুগ:
 কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে বহু ছাত্র চিকিৎসাবিদ্যায় ডিগ্রী অর্জন করা সূত্রে বাংলা তথা ভারতে অগ্রগতির নবযুগের সূচনা হয়।

মূল্যায়ন
সুতরাং নিম্নে বলা সংগত হবে যে কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলা তথা ভারতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক নব দিগন্তের সূচনা ঘটায় যার স্পর্শে গ্রন্থ ভারতীয়রা মৃত্যুর মুখ থেকে পুনরায় জীবন লাভের উপায় আসাদ পায়। এই সূত্রে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভূমিকা আজও গৌরবোজ্জ্বল ও অম্লান।

আরো দেখুন :
Next Post Previous Post
StudyQuote.IN Subscribe our Youtube Channel
StudyQuote.IN Join our Telegram Group
StudyQuote.IN Join our WhatsApp Channel