পরিব্রাজন কাকে বলে? বিশ্ব জনসংখ্যা বন্টনে পরিব্রাজনের প্রভাব লেখো

পরিব্রাজন কাকে বলে? বিশ্ব জনসংখ্যা বন্টনে পরিব্রাজনের প্রভাব লেখো

পরিব্রাজন :

দীর্ঘদিন ধরে বা স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে মানুষজন যখন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে তখন তাকে পরিব্রাজন বলে।

শ্রেণীবিভাগ :

1. জনবসতীর বৈশিষ্ট্য অনুসারে পরিব্রাজন প্রধানত চার প্রকার -

A) গ্রাম থেকে শহরে
B) গ্রাম থেকে গ্রামে
C) শহর থেকে গ্রামে
D) শহর থেকে শহরে

2. দিক অনুযায়ী পরিব্রাজন দুই প্রকার -
A) অভিবাসন বা অন্তর্মুখী
B) প্রভাসন বা বহির্মুখী

3. মাত্রা অনুযায়ী পরিব্রাজন দুই প্রকার -
A) আন্তর্জাতিক পরিব্রাজন
B) অভ্যন্তরীণ পরিব্রাজন

4. স্থায়িত্ব অনুযায়ী পরিব্রাজন চার প্রকার -
A) দীর্ঘকালীন
B) স্বল্পকালীন
C) দৈনিক
D) ঋতুভিত্তিক

5. বাধ্যবাধকতা অনুসারে পরিব্রাজন দুই প্রকার -
A) সেচ্ছামূলক
B) বাধ্যতামূলক

বিশ্ব জনসংখ্যা বন্টনে প্ররিব্রাজনের প্রভাব :

কোন দেশের জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে পরিব্রাজনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

1. এশিয়ার ওপর প্রভাব 

➞ অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকে বহু এশীয়রা, আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশে গমন করে।
➞ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাজন কালে পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তান ও ভারত এই তিন দেশের মধ্যে দেড় কোটি মানুষের পরিব্রাজন ঘটে।
➞ ভিয়েতনাম, কলম্বিয়া ইত্যাদি দেশে দীর্ঘ স্থায়ী যুদ্ধের কারণে সত্তরের দশকে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্স ও কানাড়াতে চলে যায়।
➞ কর্মসূত্রে চীন থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিব্রাজন করেছে।

2. ইউরোপের ওপর প্রভাব 

➞ সপ্তদশ শতকে ইউরোপীয়রা আবিষ্কারের নেশায় ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে পরিব্রাজন করে।
➞ দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে ইউরোপে বাধ্যতামূলক বহু সংখ্যক মানুষ পরিব্রাজন করে।

3. উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ওপর প্রভাব

➞ কাজ, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বহু মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে আসতে শুরু করে।
➞ মেক্সিকো কানাডা থেকে শ্রমিক, কিউবা থেকে বহু উদ্বাস্তু আগমনের ফলে যুক্তরাষ্ট্র আজ বহু জাতি দেশে পরিণত হয়েছে।

4. আফ্রিকার ওপর প্রভাব

➞ আফ্রিকার বহু শ্রমিক দাসত্ব প্রথার জন্য ইউরোপ ও আমেরিকাতে পরিব্রাজনের জন্য বাধ্য হয়।
➞ আফ্রিকার বহু দেশে গৃহযুদ্ধ ও খরার ফলে এক দেশ থেকে অন্য দেশে মানুষ স্থানান্তর হয়।

5. ওশিয়ানিয়ার ওপর প্রভাব

➞ উনিশ শতকে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বহু ইউরোপীয়রা বাণিজ্য ভিত্তিক, শস্য, খনিজ ও পশু পালনের উদ্দেশ্যে আগমন ঘটে।
➞ স্বাধীনতা লাভের পর এই অঞ্চলের মানুষ ইউরোপ ও আমেরিকাতে যাওয়া শুরু করে।

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।