বারাসাত বিদ্রোহ টিকা লেখো ? অথবা তিতুমীরের ওয়াহাবি আন্দোলনের কারণ কি ছিল?

বারাসাত বিদ্রোহ টিকা লেখো ? অথবা তিতুমীরের ওয়াহাবি আন্দোলনের কারণ কি ছিল?

বারাসাত বিদ্রোহ টিকা লেখো ? অথবা তিতুমীরের ওয়াহাবি আন্দোলনের কারণ কি ছিল?


ভূমিকা: 

বাংলার বারাসাতে তিতুমীরের নেতৃত্বে সংঘটিত আন্দোলন বারাসাত আন্দোলন বা ওয়াহাবি আন্দোলন নামে পরিচিত (১৭৮২_১৮৩১)। ধর্মসংস্কার আন্দোলন হিসেবে তিনি এই আন্দোলন শুরু করলে তা ইংরেজ ও মহাজন' বিরোধী হয়ে ওঠে এবং রাজনৈতিক চরিত্রের রূপ নেয়।

 বারাসাত বিদ্রোহের কারণ:

(১) ধর্ম সংস্কার:

 ওয়াহাবি কথার অর্থ হল নবজাগরণ। উপনিবেশিক শাসনকালে ইসলাম ধর্মের সংস্কার সাধনের জন্য সৈয়দ আহমেদ এই আন্দোলনের সূচনা করেন। তার সঙ্গী মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর বাংলার বারাসাতে ধর্মসংস্কার করতে এই আন্দোলনের সূচনা করেন।

(২) জমিদার ও ইজারাদারদের অত্যাচার রোধ:
ইংরেজ কোম্পানির অত্যাচারী ইজারাদার, জমিদার ও গমস্তার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে নির্মম অত্যাচার চালায়। এই নিষ্ঠুর অত্যাচার রোধে তিনি এই আন্দোলনের পথে ধাবিত হয়।

(৩) নীলকরদের অত্যাচার:
 বাংলার নীলকররা চাষীদের নীল চাষ করার জন্য জোরপূর্বক অত্যাচার চালাত। এই অত্যাচারী নীলকরদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য তিনি সচেষ্ট হন।

(৪) গোঁফ দাড়ির অপর কর:
 এই সময় সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের গোঁফ দাড়ির উপর কর ধার্য করলে তারা চরম ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায়।

সাংগঠনিক দিক :

(১) লাঠিয়াল বাহিনী গঠন:

 তিতুমীর উপরিউক্ত কারণগুলির বিরুদ্ধে প্রতিকারের লক্ষ্যে বিদ্রোহ সংগঠিত করার জন্য তিনি তার অনুগামীদের নিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেন এবং তিনি নিজেকে বাদশাহ মঈনুদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রী পদে এবং গোলাম মাসুদ কে সেনাপতি পদে নিযুক্ত করেন।

(২) বাঁশেরকেল্লা গঠন: 
বিদ্রোহ সংগঠিত করার জন্য তিনি নারকেলবেরিয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন এবং দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন।

(৩) বিদ্রোহ ঘোষণা:
 তিনি ঘোষণা করেন যে ইছামতি নদীর উভয় তীরের কৃষকের অত্যাচারী ইজারাদারদের রায়ের পরিবর্তে তাকে যেন রাজস্ব আদায় দেয়। তার এই ঘোষণায় ক্ষুব্দ হয়ে কৃষ্ণদেব রায় ইংরেজ বাহিনীর সাহায্য নিয়ে তিতুর বিরুদ্ধে চড়াও হয় শুরু হয় উভয়ের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ।

ব্যর্থতা
চরম প্রতিরোধ সত্ত্বেও ইংরেজ বাহিনীর কামানের গোলার আঘাতে তার বাঁশেরকেল্লা ধ্বংস হয়। যুদ্ধে বীরের নেয় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে)।

মূল্যায়ন: 
সুতরাং, বলা সং কত হবে যে বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও বৃটিশের বিরুদ্ধে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কে একত্রিত করে আন্দোলন সংগঠিত করার সূত্রে আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ডক্টর বিনয় চৌধুরীর মতে তার সংগ্রাম ছিল জমিদার, মহাজন' ও ইংরেজদের অন্যায় , অনাচার ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে।

নিচের প্রশ্নগুলি দেখে রাখতে পারেন :

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।