বিংশ শতাব্দী ও তার পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গে শারীর শিক্ষার ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা কর ?
বিংশ শতাব্দী ও তার পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গে শারীর শিক্ষার ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা কর ?
বিংশ শতাব্দী ও তার পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গের শারীর শিক্ষার ইতিহাসে প্রেক্ষাপটে সময়কালের দুটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন -
1. পরাধীন বা স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়কাল
2. স্বাধীন বা স্বাধীনতার পরবতী সময়কাল।
পরাধীন বা স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়কাল
1. শারিরশিক্ষা ও বিপ্লবী কর্মকান্ড
পরাধীন দেশ মাতৃকার শৃঙ্খলা মোচনের উদ্দেশ্য বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বিপ্লবীদের নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও শরীর চর্চার জন্য ব্যায়ামাগার গুলি গড়ে ওঠে। যেমন রাজ বাজার, ট্রাম ডিপোর কাছেই জিন্মেসিয়াম।
2. শারীর শিক্ষা ও মিশনারি বিদ্যালয়
ইংরেজ প্রতিষ্ঠিত মিশনারি বিদ্যালয়ে খেলাধুলা বা শরীর চর্চার ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকত। আন্ত বিদ্যালয় বা অন্ত বিদ্যালয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো। পরাধীন বাংলায় সরকারি বিদ্যালয়ের ড্রিল চালুর সিদ্ধান্ত ও নেওয়া হয়েছে । মিঃ শার্প এর লেখা ড্রিল বুক এন্ড ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ ফর স্কুল ইন বেঙ্গল (1990) বইটি স্বাক্ষর বহন করে।
3. শারীর শিক্ষায় রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনে ড্রিল চালু করেছিলেন (1910)। এই উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনচর্চা নিয়ম মাপিক নিয়মে পরিণত হয়েছিল। শারীর শিক্ষায় কবিগুরুর অবদান অনস্বীকার্য।
4. শারীরিক শিক্ষায় ব্রতচারীর আন্দোলন
ব্রতচারি আন্দোলনের শ্রেষ্ঠ গুরু সদয় দত্তের কলকাতায় ঠাকুর পুকুরে ব্রতচারী প্রশিক্ষণের জন্য ব্রতচারী গ্রাম স্থাপন করা হয়।
স্বাধীন ও স্বাধীনতার পরবর্তী সময়কাল
1. রাধা কৃষ্ণ মিশন (1948-1950খ্রী) কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষায় কর্মসূচি অনুমোদন।
2. প:ব: সরকারের নির্দেশে প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শারীর শিক্ষা বিষয়ে পাঠ্যসূচি অন্তর্ভুক্ত হয়(1949)।
3. কলকাতা স্কুল গেম ফেডারেশন (1954) গঠন।
4. কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় শারীর শিক্ষা বিভাগ চালু(1963)।
5. প:ব: রাজ্যে ক্রীড়া সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়(1965) একই সঙ্গে NFC এর অভিযান শুরু হয়।
6. বিদ্যালয় স্তরে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সিলেবাস প্রকাশ ও আবশ্যিক বিষয়ে স্বীকৃতি লাভ করে (1973)।
7. বানিপুরে সরকারি সারির শিক্ষার মহাবিদ্যালয় স্থানান্তর (1955)। 1956 সালে নতুন নামকরণ স্নাতকোত্তর শারীর শিক্ষার মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
8. বর্তমানে মাননীয় প: ব: সরকার 2013 সালে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শারীর শিক্ষা বিষয়কে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শরীর শিক্ষার বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা, বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়েছে যা বাংলায় সারীরশিক্ষা ইতিহাসে যুগান্তরকারি অধ্যায়।