কর্তার ভূত গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো
একাদশ শ্রেণীর কর্তার ভূত বড়ো প্রশ্ন ও সাজেশন
সাধারণ বিষয়বস্তু স্থান-কাল চরিত্রর দিকে লক্ষ্য রেখে সাহিত্যের নামকরণ করা হয়। কোন রচনা নামকরণ শুধু রচনাটি কে চিহ্নিত করার উপায় মাত্রই। এটি পাঠকের রচনাটিতে প্রবেশের একমাত্র চাবিকাঠি তাই সাহিত্য রচনা নামকরণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
আলোচ্য গল্পে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্তার ভূত নাটক যে শিরোনাম নির্বাচন করেছেন তা যথার্থ তাৎপর্যপূর্ণ । কর্তার ভূত ছোট গল্প আমরা দেখি যে বুড়ো কর্তার মৃত্যুকালে দেশবাসী অভিভাবকহীন হওয়ায় ভয়ে ভীত হয়ে ভগবানের দ্বারায় অন্ন বস্ত্র ও বাসস্থানের সুরাহা না হলেও তারা কিন্তু শান্তিতেই থাকল। দু একজন ভূতেদের শাসনতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন করলে তাদের ভাগ্যে জুটল ভূতের কান মোলা বাকিরা গর্বের সঙ্গে দিনযাপন করতে দেখেছিল।
ভুতের জেলখানায় দেয়ালটি যেহেতু অদৃশ্য সেহেতু সেই দেওয়াল ভেদ করে বেরিয়ে আসার উপায় ও কারোর জানা নেই । এই জেলের ঘানি ঘোরালে তেলের পরিবর্তে কেবল বেরিয়ে আসে পেষণ করি তেজ । এর ফলে পেষণকারীরা তাদের তেজ হারিয়ে ঠান্ডা হয়ে যাওয়া দেশের চূড়ামণি। শিরোনামে এই সময় জানিয়েছিল ----
'বেহুশ যারা তারাই পবিত্র
হুশিয়ার যারা তারাই অশূচি'
হুশিয়ার দেশবাসী উদ্দেশ্যে ভুতের নায়ক চোখ রাঙিয়ে বলে - 'চুপ এখনও ঘানি অচল হয়নি'।
দেশের মানুষ এই অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাইলেও কর্তার নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হতে তারা ভয় পায় কর্তা তাই বলেছিলেন -- "সেইখানেই তো ভূত"।
এইভাবে লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গল্প প্রাচীন সভ্যতা রুপী কর্তার ধর্মতন্ত্র রূপে ভূতে আস্তে পৃষ্ঠে আচ্ছন্ন । আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় কঠোর সমালোচনা করেছেন সেই দিক থেকে বিচার করলে নিঃসন্দেহে বলা যায় কর্তার ভূত নামক ছোট গল্পটির নামকরণ যথার্থ সাথক ।।