ভূতের রাজত্বে আর কিছু না থাকুক শান্তি থাকে মন্তব্যটি ব্যাখ্যা কর

কর্তার ভূত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - একাদশ শ্রেণী

প্রশ্ন উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত কর্তার ভূত নাটক রচনা থেকে। আলোচ্য রচনাটি লিপিকা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত একটি সুপরিচিত গল্পিকা।

প্রাচ্যের দেশগুলি তাদের প্রাচীন কুসংস্কারকে অর্থাৎ পুরনো রীতি নীতিকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে ছিল। এই রীতিনীতি গুলি ছিল অচল। এই অচল রীতিনীতিকে ভূতের প্রভাব বলে মনে করা হয়েছে । ভূত অর্থাৎ অতীত যখন বর্তমান কালের উপর জড়িয়ে বসে তখন সেই ভূতের রাজত্বে একটা অদ্ভুত শান্তি বিরাজ করে। দেশবাসী চোখ কান বুজে অলস জীবন কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, কিন্তু এই শান্তিতে কিছু পরিমাণ ব্যাঘাত ঘটলেই ভূতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে তারা নিশ্চিন্তে বসে থাকে। তাই তাদের জীবনে কোন অশান্তি বা বিরাট কোনো পরিবর্তন হয় না।

অমূল্য কোন পরিবর্তন না হওয়ার জন্য দেশের উন্নতি হোক বা না হোক তাতে কারোর যায় আসে না। কেননা ভুতের দেশে মানুষের সকলেই শান্তিতে বসবাস করে তাই বাইরের কোন আক্রমণ তাদের স্থবীর জীবনকে আন্দোলিত করতে পারবে না। এর উল্লেখযোগ্য কারণ হলো প্রতিবাদের ভাষা এবং বিদ্রোহ করে ছিনিয়ে নেওয়ার মনোভাব এদের মধ্যে তখন ও জেগে ওঠেনি। তাই এই ঘটনাগুলোকে তারা ভবিতব্য বা ভূতের ক্রিয়া-কলাপ বলে মেনে নেয়।

আলোচ্য অংশে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্যঙ্গ করে সমকালীন বৃহত্তর ও সমাজ মানসিকতার ওপর এই ভাবেই আঘাত হেনেছে। বাস্তব চেতনা নিয়েই তিনি ভারতবাসী মূল্যায়ন করেছেন ভারতবাসী যতই অত্যাচারী হোক না কেন আদতে তারা শান্তিপ্রিয় মানুষ আর এজন্যই হয়তো তারা প্রতিবাদে অংশ নেয় না। এইভাবেই বিশ্ব কবি ব্যঙ্গও বিদ্রুপের মাধ্যমে বাঙালির দুর্বল চেতা মনকে নাড়া দিতে চেয়েছেন।।

কর্তার ভূত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যান্য প্রশ্নোত্তর

Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।