JOIN & SUBSCRIBE

নুন কবিতার ভাববস্তু আলোচনা করো ।

নুন কবিতার ভাববস্তু আলোচনা করো ।

সাম্প্রতিককালের এক বলিষ্ঠ সমাজসচেতন কবি জয় গোস্বামী। যুগ যন্ত্রণা এবং যুগের হতাশা বেদনা-তার কবিতার প্রথম ও প্রধান উপদিব্য। এই ধারার অন্যতম নুন কবিতাটি দারিদ্র্য পীড়িত সাধারণ মানুষের দৈনন্দিনতারই দর্পণ।

উত্তম পুরুষের জবানিতে অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে কবি সাধারণ মানুষদের জীবন সংকটের চিত্র এঁকেছেন । সাধারণ মানুষের জীবনে কোন চাওয়া-পাওয়ার হিসেব মেলে না। কিন্তু আকাঙ্ক্ষা তো দুর্নিবার, অথচ তার পরিতৃপ্তি হয় না। তখন তা এক অতৃপ্তির বেদনায় জীবনটি অসুখী করে তোলে। তাই সাধারণ মানুষ সল্পেই সন্তুষ্ট। রোগে শোকে ধারদেনাতে, সাধারণ ভাত-কাপড় এ কোনরকমে দিন চলে যায় তাদের। হয়তো বা তার জীবন যন্ত্রণা থেকে সাময়িকভাবে মুক্তি পেতে তারা এক আচ্ছন্নতার জগতে ডুবে যেতে চায়। 

সামাজিক সম্পর্কের বিন্যাস ভুলে গিয়ে পিতা-পুত্রের ব্যবধান ভুলে গিয়ে তারা বাপ-বেটা দুভাই গঞ্জিকাতে টান মারে। বাপ-বেটা দুভাই কথাটির মধ্যে যেন অভাব পীড়িত মানুষেরা সবাই দরিদ্র পীড়িত বুভুক্ষের পংখিতে অবস্থান করে। অর্থাভাবে তাদের সব দিন বাজার হয় না। আবার কখনো কখনো হাতে পয়সা থাকলে লাগামহীন বাজার হয়ে যায়। বাড়ি ফেরার পথে গোলাপ চারা কিনে আনে তারা। কিন্তু তাদের জীবনে কি ফুল ফোটে, গোলাপের সৌরভ থাকে? তাই তাদের ব্যাকুল সংশয় প্রশ্ন কোথায় লাগাবে, ফুল ফুটবে কিনা। মাঝে মাঝে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে যখন তারা দেখে ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুন টুকুও নেই তখন তাদের রাগ চড়ে মাথায় উঠে। বাপ বেটা দুজনে মিলে সারা পাড়া মাথায় করে, সামাজিক সৌজন্যবোধ হারিয়ে তারা বেপরোয়াভাবে ঘোষণা করে 'করিত কার তাতে কি'। সুখ-সমৃদ্ধি তো তাদের জীবনের চির অধরা। তাই কবিতার শেষে তাদেরই কন্ঠে সোচ্চার হয় 'আমাদের শুকনো ভাতে লবনের ব্যবস্থা হোক'। বেঁচে থাকার নূন্যতম এবং সঙ্গত এই দাবিতো সমস্ত অভাব পীড়িত মানুষের চিরকালের দাবি।

    এই চ্যাপ্টারের আরো অন্যান্য প্রশ্নগুলিও দেখুন



Post a Comment

এই তথ্যের ব্যাপারে আরো কিছু জানা থাকলে বা অন্য কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানে লিখতে পারেন ।
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.