বাংলা নাটকে বিজন ভট্টাচার্যের অবদান আলোচনা করো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কালে বাংলার নবনাট্য গণনাট্য আন্দোলনের অগ্নি কারে অগ্রণী নাট্যকার হিসেবে বিশিষ্ট হয়ে আছেন বিজন ভট্টাচার্য।
বাংলার গণনাট্য আন্দোলনের অক্লান্ত কর্মী প্রতিষ্ঠাতা এবং শক্তিশালী অভিনেতা বিজন ভট্টাচার্য। বাংলার গণনাট্য আন্দোলনের অক্লান্ত কর্মী বিজন ভট্টাচার্য মূলত চার শ্রেণীর নাটক লিখেছিলেন। তবে পূর্ণাঙ্গ ও একাঙ্ক নাটক লিখেই তার প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন।
নবান্ন (১৯৪৪) নাটকে বিজন ভট্টাচার্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে ১৩৫০ বঙ্গাব্দের ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ, লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু, মানবতার চরম অবক্ষয় অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি জবানবন্দি নাটকে। গোত্রান্তর ও দেবীগর্জন নাটক দুটিতে বিজন ভট্টাচার্যের সমাজদর্শন জীবন ভাবনা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বাঙালি চরিত্রের জটিল মানসিকতার সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে। ভরা চাঁদ, হাঁসখালির হাঁস, চুল্লি প্রভৃতি বিজন ভট্টাচার্যের সার্থক একাঙ্ক নাটক।
বাংলা নাটকের ক্ষেত্রে নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্য কতগুলি অভিনব দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা করেন। মহাকাব্যিক বিষয়কে তিনি নাটকের বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আঙ্গিক ও উপস্থাপনার ক্ষেত্রে তিনিই নতুনত্ব এনেছেন, তিনি প্রথম বাংলা নাটকে shadow play এবং zonal acting এর সূচনা করেন। সব মিলিয়ে বাংলা নাটকের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে বিজন ভট্টাচার্য প্রতিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন।