অনুবাদ সাহিত্যের তিনটি ধারা কি কি? যেকোনো একটি ধারার প্রধান কবির (কৃত্তিবাস ওঝা) প্রতিভা আলোচনা করো?

অনুবাদ সাহিত্যের তিনটি ধারা কি কি? যেকোনো একটি ধারার প্রধান কবির (কৃত্তিবাস ওঝা) প্রতিভা আলোচনা করো?


অনুবাদ সাহিত্যের ধারা তিনটি হলো 
  • রামায়ণ
  • মহাভারত 
  •  ভাগবত

রামায়ণের সর্বপ্রথম ও সর্ব প্রধান কবি হলেন কৃত্তিবাস ওঝা।

কৃত্তিবাসের কবি প্রতিভা :

'কৃত্তিবাস কীর্তিবাস কবি এবং এর অলংকার' - কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সংগত কারনেই কবি কৃত্তিবাস এর প্রতি সশ্রদ্ধ উচ্চারণ করেছেন। কবিগুরু বাল্মিকীর রামায়ণ কে সংস্কৃতের জটাজাল থেকে কবি কৃত্তিবাস বাংলা ভাষায় মুক্তি দিয়েছিলেন, নাম দিয়েছিলেন শ্রীরাম পাঁচালী। রামায়ণের কাহিনী আশ্রয় করলেও আপন প্রতিভা অমৃত পরশে কবি কৃত্তিবাস প্রায় এক নতুন সৃষ্টির কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি বাল্মিকী রামায়ণ থেকে সরে এসে বাঙালির রুচি, ধর্ম ও সংস্কৃতির অনুকূলে নতুন কাহিনীর সৃষ্টি করেছেন। বাল্মীকির শ্রীরাম কৃত্তিবাসের লেখনীতে বাঙালি চরিত্র ও ধর্মানুসারে এক কোমল পুরুষে পরিণত হয়েছে।

 শ্রীরাম এর কন্ঠ থেকে উচ্চারিত -
 " সীতা ধ্যান, সীতা জ্ঞান, সীতা চিন্তামণি
 সীতাহারা আমি যেন মণিহারা ফণী"

এই অকপট শান্ত কোমল ভাবই শ্রীরাম কে প্রকৃতপক্ষে দেবত্ব থেকে পত্নী প্রেমিক এক রক্তমাংসের মানুষএ রূপান্তরিত করেছে। জনক নন্দিনী জানকিও তার হাতে এক আদর্শ বাঙালি নারীতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মাটি, জল, ফুল-ফল দৈনন্দিন জীবনাচরণ প্রভৃতি দিয়ে যে অযোধ্যা তিনি গড়ে তুলেছেন তা প্রকৃতপক্ষে বাঙালির হৃদয় অযোধ্যায়ী। 

বাঙালির বাৎসল্য ভ্রাতৃত্ব, পত্নী প্রেম, সতীত্ব যে কত দূর হতে পারে তার স্বার্থ উদাহরণ এই শ্রীরাম পাঁচালী। গোটা কাহিনীর সর্বত্র অহেতুক জটিলতা থেকে এক অপূর্ব সারল্যে উপনীত হয়েছেন তিনি। এই সারল্যই কৃত্তিবাসকে যুগ-যুগান্ত ধরে বাঙালির হৃদয় সিংহাসনে অমরত্ব দান করেছে। তাই বাঙালির সামাজিক রাষ্ট্রীয় ও সাংস্কৃতিক বিপুল রূপান্তরের মধ্যেও কৃত্তিবাসী রামায়ণ বাঙালির কাছে আজও উচ্চারিত।

    এই চ্যাপ্টারের আরো অন্যান্য প্রশ্নগুলিও দেখুন

Next Post Previous Post
StudyQuote.IN Subscribe our Youtube Channel
StudyQuote.IN Join our Telegram Group
StudyQuote.IN Join our WhatsApp Channel