WhatsApp Channel
Join Now
Telegram Group
Join Now
YouTube Channel
Subscribe

‌1946 সালের নৌ বিদ্রোহের কারণ, ফলাফল বা গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ( Nou Bidroho In Bengali )

Class 12 History Suggestions | Class XII History Important Questions Answers

নৌ বিদ্রোহ



ভূমিকা - 

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পর শেষ পর্বে এক উল্লেখযোগ্য সংগ্রাম হলো নৌবিদ্রোহ। 1946 খিস্টাব্দে আজাদ হিন্দ সেনাদের আত্ম যোগ ও সংগ্রাম ভারতীয় নৌ সেনাদের বিদ্রোহি করে তোলে।

নৌ বিদ্রোহের কারণ

>বিদ্রোহের পিছনে নানান কারণ ছিল -

প্রথমত বর্ণ বৈষম্য
নৌবাহিনীতে প্রবল বর্ণবৈষম্য ছিল। নৌবাহিনীর শ্বেতাঙ্গ অফিসাররা ভারতীয় নৌ সেনাদের প্রতি অতি অভদ্র ও অশালীন আচরণ করতো, কারণে-অকারণে তাদের গালাগালি দিতো,যার ফলে নৌ সেনাদের মনে যথেষ্ট অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল ।

‌দ্বিতীয়ত বেতন বৈষম্য

ভারতীয় নৌসেনাদের বেতন ছিলো খুবই কম অথচ একই কাজে যুক্ত কর্মচারীরা অনেক বেশি বেতন ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করত।

‌তৃতীয়ত নিম্ন আহার
নৌবাহিনীর ভারতীয় কর্মীদের নিকৃষ্ট আহার দেওয়া হতো। বহুবার আবেদন করেও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি, এইসব কারণে ভারতীয় নৌবাহিনীতে অনেক আগে থেকে অসন্তোষ ছিল।

‌চতুর্থত সেনাদের কর্মচুত করা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বহু ভারতীয় কে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হয় কিন্তু যুদ্ধের পরে তাদের কর্মচুত করা হয় ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ক্ষপের সঞ্চার হয়।

‌পঞ্চমত প্রেরণা
এই বিদ্রোহের পিছনে আজাদ হিন্দ বাহিনীর যে যুদ্ধ প্রেরণা ছিলো সে সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই । বিদ্রোহীরা `indian national army ´এর অনুকরণে নৌবাহিনীর নামকরণ করেন "indian national nevy"।

নৌ বিদ্রোহের সূচনা

মুম্বাই বন্দরে রয়েল ইন্ডিয়ান নেভির তলোয়ার নামক জাহাজের রেডিও অপারেটর বলাই দত্ত জাতীয়তাবাদী স্লোগান দেওয়ার অপরাধে পদচুত হন, এর প্রতিবাদে রয়েল ইন্ডিয়ান নেভির প্রধান MS খানের নেতৃত্বে 1500 হাজার নাবিক বিদ্রোহ ঘোষণা করে। 1946 খিস্টাব্দে 18 ই ফেব্রুয়ারী
‌স্ট্রাইক কমিটির দাবি, বিদ্রোহীরা এক জোট হয়ে নেভাল সেন্ট্রাল স্ট্রাইক কমিটি গঠন করে। এই কমিটির বেশ কিছু দাবি ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করে, দাবীগুলি হলো -------

1. INA সেনাদের ও অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তিদান।

2. তলোয়ার জাহাজের সেনা প্রধান F. W. king বিরুদ্ধে শাস্তি গ্রহণ ।

3. ভারতীয় নৌসেনাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা ।

4. উন্নত মানের খাদ্যের ব্যবস্থা করা।

5. ইন্দোনেশিয়া থেকে ভারতীয় নৌসেনাদের ফিরিয়ে আনা।

‌আন্দোলনের অবসান

21 ফেব্রুয়ারী ব্রিটিশ বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের সঙ্গে 6 ঘন্টা ধরে গুলি বিনিময় চলে, বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ আনতে ব্যর্থ হলে ব্রিটিশ বাহিনী ডগ অঞ্চল থেকে গোলা বর্ষণ শুরু করে, অবশেষে সর্দার বল্লভভাই পেটেলের নির্দেশে বিদ্রোহীরা আত্ম সমর্পন করে।

নৌ বিদ্রোহের গুরুত্ব

এই বিদ্রোহের গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম

1. সিপাহী বিদ্রোহের প্রথম এবং নৌ বিদ্রোহ শেষবারের মতো ভারতীয় সেনারা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যেভাবে বিরোধী হয়েছিল, তাতেই ব্রিটিশরা বুঝতে পেরেছিল ভারতীয় নৌ সেনাদের ওপর ভরসা করে ,ভারতে বেশি দিন সাম্রাজ্য চালানো সম্ভব নয় ।

2. নৌ বিদ্রোহের জন্যই ব্রিটিশ প্রশাসন ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল।

3. নৌসেনাদের বিদ্রোহে সাধারণ মানুষের মনে ব্রিটিশের ভিত ছিল দেশীয় সেনা ও সাধারণ প্রজাদের মধ্যে ব্যবধান দূর হয়েছিল।

4. নৌ বিদ্রোহে হিন্দু ও মুসলিম দুই জাতি যোগ দিয়েছিল, সবশেষে বলা যায় নৌ বিদ্রোহ ছিল ভারতের স্বাধীনতা লাভের উল্লেখযোগ্য সংগ্রাম ।
■ More Posts from -
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url